প্রসঙ্গ: মাহে রবিউল আউয়াল ও রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি ভালোবাসার অভিব্যক্তি


লেখক: ড. আহমদ আলী

প্রতি বছরই মাহে রবিউল আউয়াল আগমনের সাথে সাথে আমাদের মধ্যে জাঁকজমকের সাথে রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

সেই সাথে ফেসবুক পাড়াও এ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক উৎসব উদযাপনের পক্ষেবিপক্ষে বেশ সরগরম হয়ে ওঠে।

আমরা মনে করি,
অনেকেই বিভিন্নরূপ আয়োজনের মাধ্যমে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, তারা রাসূলুল্লাহ সা.-কে খুব বেশি ভালোবাসেন এবং এ পৃথিবীতে তার শুভাগমনে তারা অত্যন্ত আনন্দিত। বস্তুত তাদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রতি কী পরিমাণ প্রকৃত ভালোবাসা রয়েছে- তা আল্লাহ তা‘আলাই ভালো জানেন। তবে এটা যে তাদের আবেগের সাময়িক বহিঃপ্রকাশ- এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

এ ক্ষেত্রে আমাদের এ কথাও মনে রাখা প্রয়োজন, আমাদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রতি যে গভীর ভালোবাসা ও আবেগ রয়েছে, তা নিছক জাঁকজমকের সাথে প্রদর্শনের বিষয় নয়;
বরং নিজের ব্যক্তি জীবনে তার সুন্নত ও পদাঙ্কের যথার্থ অনুসরণ এবং সমাজ জীবনে তার নীতি ও আদর্শ প্রচার ও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তা কার্যত প্রমাণ করার বিষয়।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,
من أحيا سنتي فقد أحبني
‘‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে পুনরুজ্জীবিত করলো, সে-ই [প্রকৃত অর্থে] আমাকে ভালোবাসলো।” তিরমিযী

আমরা আশা করি,
এ মাসে লোকদের প্রদর্শিত আনুষ্ঠানিক ভালোবাসা কেবল মওসুমি ও লোক দেখানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং তা স্থায়ী ও প্রকৃত ভালোবাসার রূপ নেবে এবং তারা তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে তার ভালোবাসার দাবিগুলো পূরণে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে।

আমাদের সকলের এ কথাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রতি আমরা আমাদের ভালোবাসা ও আবেগ যখনই প্রকাশ করি না  কেন, তা অবশ্যই নির্দোষ ও পবিত্র পরিবেশে হওয়া চাই।
এ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সা.-এর শিক্ষা ও তার সাহাবীগণের তরীকা অনুসরণই একান্ত কাম্য; কোনোরূপ সীমালঙ্ঘন বা বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ মোটেরওপর কাম্য নয়। 

আল্লাহ তা‘আলার নিকট দুআ করি,
হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সকলকেই ভবিষ্যতে প্রতিটি কথা ও কাজে তার সুন্নত ও শিক্ষার অনুসরণের মাধ্যমে তাকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসার পরিচয় দেওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।।

জনৈক কবি কতোই চমৎকার বলেছেন,
من يدّعي حُبَّ النبي ولم يُفد  من هديهِ فسَفاهةٌ وهُراءُ
الحُب أوّلُ شرطِهِ وفُروضهِ  إنْ كان صِدقًا طاعةٌ ووفاءُ

“যে ব্যক্তি দাবি করে যে, সে রাসুলুল্লাহ সা.-কে ভালোবাসে;
অথচ সে তাঁর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে না, তাঁর নির্দেশনা মান্য করে চলে না,
সে ব্যক্তির এ দাবি (তার) নির্বুদ্ধিতা ও মূর্খতা-(র প্রকৃষ্ট প্রমাণ) ও নিছক অন্তঃসারশূন্য (অপলাপ বৈ নয়)।

ভালোবাসার প্রথম শর্ত ও কর্তব্যই হলো যদি সেই ভালোবাসা সত্যি হয়
(প্রিয়তম ব্যক্তির নির্দেশনাসমূহ) মান্য করে চলা এবং (ভালোবাসার দাবিসমূহ) পূর্ণরূপে প্রতিপালন করা।”

সোর্স: ড. আহমদ আলী স্যারের পেইজ থেকে নেয়া

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
error: Content is protected !!